যেকোন ধরণের ধর্মীয় প্রশ্নের উত্তর জানতে বামে মেজেজ্ঞার আইকনে ক্লিক করে আমাদের প্রশ্নটি লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে জানান, SanatanLive.blogspot.com

হিন্দু বাড়িতে তুলসী গাছ থাকে কেন

প্রশ্ন: সনাতনী বা হিন্দুদের বাড়িতে তুলসী গাছ থাকে কেন?


তুলসী (Tulsi/Holy Basil/ thai Krapho) একটি Lamiaceae family এর অন্তর্গত সুগন্ধি বীরুত্ জাতীয় উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম Ocimum sanctum (sanctum অর্থ পবিত্র স্থান) । হাজার হাজার বছর ধরে সাধারণত কৃষ্ণ ও সাদা তুলসী এই দুই প্রকারে প্রাপ্ত তুলসী হিন্দু গৃহে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে পূজিত হয়ে আসছে যেহেতু এর পিছনে রয়েছে ধর্মীয় ,পরিবেশগত ও বৈজ্ঞানিক কারণ ।

ধর্মীয় কারণ :

ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে তুলসীকে সীতাস্বরূপা , স্কন্দপুরাণে লক্ষীস্বরূপা, চর্কসংহিতায় বিষ্ণুর ন্যায় ভুমি, পরিবেশ ও আমাদের রক্ষাকারী বলে বিষ্ণুপ্রিয়া , ঋকবেদে কল্যাণী বলা হয়েছে। স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু তুলসী দেবীকে পবিত্রা বৃন্দা বলে আখ্যায়িত করে এর সেবা করতে বলেছেন।

পরিবেশগত কারণ

-------------------------

তুলসী ঘরে থাকা মানেই ঘরে অক্সিজেনের প্রাচুর্য. পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তুলসীগাছ একমাত্র উদ্ভিদ যা দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহ করে বায়ু বিশুদ্ধ রাখে যেখানে অন্য যেকোন গাছ রাত্রিতে কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে তাই রাতের বেলাতে তুলসীতলায় শয়ন করাও ব্যক্তির জন্য উপকারী।এছাড়া তুলসীগাছ ভুমি ক্ষয় রোধক এবং তুলসী গাছ লাগালে তা মশা কীটপতঙ্গ ও সাপ থেকে দূরে রাখে।


আরো জানুন : তুলসী গাছ শুকিয়ে যায় কেন


বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যগত কারণ:

--------------------------------------

তুলসী বহুগুণা। সর্দিকাশি কমানোর পাশাপাশি তুলসী রোগ-জীবাণু মারে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ঘরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে পজিটিভ এনার্জি আনে। এই জন্যেই প্রাচীন যুগ থেকে তুলসীর (Tulsi) বিশেষ আদরকদর হিন্দু ঘরে এবং হিন্দু পুরাণে। আজ জেনে নিন, কতভাবে আমাদের রোজের জীবনে উপকারে (Benefits) লাগে তুলসীগাছ---


*তুলসীতেEugenolঅধিক পরিমাণে থাকায় তা Cox-2 Inhibitorরূপে কাজ করে বলে তা ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

*Hypoglycemic drugs এর সাথে তুলসী খেলে তা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

*তেজস্ক্রিয়তার ফেলে ক্ষতিগ্রস্থ কোষসমুহকে মেরামত করে।

* কানের সমস্যা কমায় : কানের ব্যথা কমাতে দিনে দু-বার তুলসী তেল দু-ফোঁটা করে দিলে আরাম পাবেন। 


* জলে তুলসীপাতা ফুটিয়ে, ছেঁকে তাতে মধু মিশিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় নিয়মিত খেলে কিডনির পাথর মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।  


*চর্বিজনিত হৃদরোগে এন্টি অক্সিডেন্টের ভুমিকা পালন করে।


*তুলসী একশেরও বেশি Phytochemicals(যেমন oleanolic acid ,beta caryophyllene ইত্যাদি)বহন করে বলে ক্যান্সার চিকিত্সায় ব্যবহৃত হয়।


*তুলসীর অ্যালকোহলিক নির্যাস Immune system এর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।


*তুলসী স্নায়ুটনিক ও স্মৃতিবর্ধক।


*শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্নরোগ যেমন ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ,হাঁপানি প্রভৃতি রোগের নিরাময়ক।


*সর্দি ,কাশি, জ্বর, বমি, ডায়ারিয়া ,কলেরা , মুখের আলসারসহ চোখের বিভিন্ন রোগে ইহা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


*দাঁতের রোগে উপশমকারী বলে টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।গোলমরিচ আর তুলসীপাতা একসঙ্গে বেটে গোলাকার বড়ির মতো বানিয়ে শুকিয়ে নিন। দাঁতে ব্যথা শুরু হলেই জিভের নীচে এই একটি গুলি রেখে দিলেই ব্যথা কমবে নিজে থেকেই।

ঘরে একটি তুলসী গাছ মানেই নেগেটিভ এনার্জি সরে পজিটিভ এনার্জির আগমন। তাই প্রাচীন যুগ থেকে সব বাড়িতে তুলসী গাছ রেখে তার পুজো করা হয়।


Post a Comment

উপরের তথ্যটি সম্পর্কিত আপনার কোন জিজ্ঞাসা আছে? বা এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এমন কোন বিষয় জানার আছে? থাকলে অবশ্যই সুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করে জানান, আমরা নিশ্চয়ই আপনাকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করব এবং এতে উভয়ের জ্ঞানের প্রসার ঘটবে।

Previous Post Next Post