যেকোন ধরণের ধর্মীয় প্রশ্নের উত্তর জানতে বামে মেজেজ্ঞার আইকনে ক্লিক করে আমাদের প্রশ্নটি লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে জানান, SanatanLive.blogspot.com

মহর্ষি ভরদ্বাজ ও বৈমানিক শাস্ত্র

০০০-৭০০০ বছর আগেই প্রাচীন বৈদিক ঋষি ভরদ্বাজ নানাধরনের বিমানের তথ্য লিপিবদ্ধ করেন।


পরিচিতি: ভরদ্বাজ মুনি, এছাড়া গুগু নামেও পরিচিত (আইএএসটি (সংস্কৃত লিপ্যন্তরের আন্তর্জাতিক বর্ণমালা): Bharadvāja) বা ভরদ্বাজ, বৃহস্পত্যাপ্রাচীন ভারতের অন্যতম সম্মানিত বৈদিক ঋষি (মহর্ষি) ছিলেন, যিনি একজন প্রখ্যাত পণ্ডিত, অর্থনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট চিকিৎসকও ছিলেন। মূলত প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য পুরাণ এবং ঋগ্বেদে তাঁর অবদান, তৎকালীন ভারতীয় সমাজকে দেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।তিনি এবং তাঁর ছাত্র পরিবারকে ঋগ্বেদের ষষ্ঠ বইয়ের লেখক হিসাবে মনে করা হয়। ভরদ্বাজ ছিলেন ব্রাহ্মণযোদ্ধা দ্রোণাচার্যের জনক, দ্রোণাচার্য হলেন মহাভারতের এক প্রধান চরিত্র, যিনি পাণ্ডব এবং কৌরব উভয় রাজকুমারদেরই প্রশিক্ষক ছিলেন। তিনি মহাভারতের এক কিংবদন্তি যোদ্ধা অশ্বত্থামার ঠাকুর্দা ছিলেন। দ্রোণাচার্য ও অশ্বত্থামা দুজনেই কৌরবদের পক্ষ নিয়ে মহাভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ভরদ্বাজকে চরক সংহিতাতেও উল্লেখ করা হয়েছে, যেটি প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসকদের পাঠ্য ছিল। মহর্ষি ভরদ্বাজকে "ভেষজ ঔষধের জনক" (আয়ুর্বেদ) হিসাবে উল্লেখ করা হয়।


তিনি ঋগ্বেদ এবং শতপথ ব্রাহ্মণ পুস্তকে চারবার উল্লিখিত সাত ঋষির মধ্যে একজন, এরপরে তিনি মহাভারতএবং পুরাণ এ, সম্মানিত হয়েছেন।


বৌদ্ধ পালি ভাষায় লেখা দিঘা নিকায়া র মত গ্রন্থে, তেভিজ্জা সূত তাঁর সময়ে বুদ্ধ ও বৈদিক পণ্ডিতদের মধ্যে আলোচনার বর্ণনা দিয়েছেন। বুদ্ধ দশ জন ঋষির নাম নিয়েছিলেন, তাঁদের "প্রাথমিক ঋষি" সম্বোধন করেছিলেন এবং প্রাচীন যুগে যেগুলি তাঁর যুগে সংগৃহীত এবং জপ করা হত সেগুলির রচয়িতা এবং সেই দশটি ঋষির মধ্যে রয়েছেন ভরদ্বাজ।


প্রাচীন হিন্দু চিকিৎসা গ্রন্থ চরক সংহিতায় বলা হয়েছে, ভরদ্বাজ, দেবরাজ ইন্দ্রের কাছ থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞান শিখেছিলেন, তিনি আবেদন করে বলেছিলেন "খারাপ স্বাস্থ্য মানুষের আধ্যাত্মিক যাত্রা অনুসরণে মানুষের দক্ষতাকে ব্যাহত করছে"। এই আবেদন জানানোর পরে, ইন্দ্রদেব চিকিৎসার জ্ঞানের পদ্ধতি এবং বৈশিষ্ট্য উভয় বিষয়েই শিক্ষাদান করেন


তার লেখা অনেক পুস্তকের মধ্যে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পুস্তক হল:


(বৈমানিক শাস্ত্র) Vaimānika Shāstra



বইটি বিমান নির্মাণ,বিমান অদৃশ্যকরণ,শত্রু বিমান ধ্বংস-করন, বিমান উড়ার সময় শত্রুর মাটির নিচে রাখা যুদ্ধাস্ত্র চিহ্ণিতকরণ, সম্মুখে থাকা শত্রুর বিমানের সামনে অন্ধকার করে দেওয়া,বিমানকে মেঘের মতো লুক দিয়ে দেখানো , বিমান থেকে আলাদা আলাদা সাউন্ড দেওয়া, বিমানের সাউন্ডকে কন্ট্রোল করার যন্ত্র, প্রয়োজনে বিমান ছোট বা বড় হওয়া, বিমান পানিতে চলার সময় বর্তমানের সাবমেরিনের মতো যন্ত্রে পরিণত হওয়া, স্পেসে বিমান সহ ভ্রমণ সহ মোট আটটি অধ্যায়ে সাজানো।বইটিতে তিন ধরনের বিমান(রুকমা,সাকুনা,ত্রিপুরা) এর গঠনের কথা উল্লেখ আছে।


বিমানের নানা যন্ত্রের বর্ণনা এবং বিমানের ১৬ প্রকারের জ্বালানির কথাও উল্লেখ আছে।

৭ প্রকার মোটরের বর্ণনা আছে,


বিমান চালনার সময় ১২ ধরণের নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। ৮ টি চাপ্টারে ৩০০০ এট মতো শ্লোক রয়েছে এই পুস্তকে।পাইলটের জানা জরুরি এরকম ৩২ টি টিপস আছে, এবং জরুরি মুহূত্বের জন্য করণীয় সহ ক্যাপসুল ব্যবহারের তথ্যাদিও দেওয়া আছে। পৃথিবীর এডমোর্সফিয়ারের বর্ণনাও ডিটেইলস ভাবে আছে।




মেঘের মধ্যে বিমান লুকানো


বই এর বর্ণনামতে একটি বিমান ছিল বৃত্তাকার এবং এগুলো দ্বারা আকাশে উড়া যায়!


বিমানের জ্বালানিতে ব্যবহার করা হত পারদ আবার কখনও হলুদেটে সাদা তরল।  বিবরণ দ্বারা বুঝা যায় বিমানগুলোতে কম্বাসচন ইঞ্জিন এবং পালস-জেট ইঞ্জিন দুই ধরনের ইঞ্জিনই ব্যবহার করা হত।

  pictures : pushpok Vimana art, scoure: aloneworld

সমস্যা:

১. এই পুস্তকে বিমানগুলি কিভাবে ভূমি থেকে আকাশে উড়বে তা নিয়ে কোন লেখা নাই: এই উত্তর পেতে বইটির লেখকের ইতিহাস জানা দরকার। বৈমাণিক শাস্ত্র বইটি রচনা করেন  Pandit Subbaraya Shastry (1866–1940), তিনি এই পুস্তকের সমস্ত ক্রেডিট দিয়েছিলেন হাজারো বছর আগের ঋষি ভরতদ্বাজ -কে। এই জ্ঞান তৎক্ষালিন সময়ে আরো একজনের কাছে ছিল যার নাম Bapuji Talpade ( 1864-1916)। কিন্তু তাদের এই বৈমাণিক শাস্ত্রের জ্ঞানের সোর্স জানা যায়নি।Pandit Subbaraya Shastry এই পুস্তক লিখে নাই, শুধু ডিকটেট করে এটার কনটেন্টগুলো দিয়েছিলেন   ( Gotur VenikatAchala Sharma) কে, ১৯১৮-১৯২৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছর লেগেছিল এই কনটেন্ট গুলো সম্পূর্ণ নতুন করে ডিকটেট করতে, তিনি ( Gotur VenikatAchala Sharma) 23EXERCISE BOOKS এ এই কনটেন্ট গুলো ডিকটেট করেন।১৯২৩ সালে ডিকে এলেপটা নামে এক ডাওটসম্যানকে বিমানের নকশা নতুন করে ডিকটেট করতে দিয়েছিলেন।



  ১৯২৩ সালে এরকম পুস্তক লেখার এক্টিভিটির জন্য  Pandit Subbaraya Shastry কে ব্রিটিশরা জেলে প্রেরণ করে। 

আর এই পুস্তক অফিসিয়াল ভাবে প্রকাশ হওয়ার আগেই ১৯৪০-৪১ এ Pandit Subbaraya Shastry দিব্যধাম প্রাপ্ত হয়। এরআগে পন্ডিত Gotur VenikatAchala Sharma কে এই জ্ঞান লিখিতরুপে ছেড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই পুস্তকটি Rajakiya Saskrit Libery, Baroda (1944) এ সংরক্ষণ করা হয়েছিল, এই পুস্তক সংস্কৃত থেকে সর্বপ্রথম হিন্দিতে অনুবাদিত হয় ১৯৫৯ সালে।১৯২৩ সাল থেকে প্রায় ৫০ এই বইটি অফিসিয়াল ভাবে প্রকাশ হতে পারেনি, সর্বপ্রথম অফিসিয়াল ভাবে প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে, যা প্রকাশ করেন DR GR JOSYER .  এই হিস্টোরি ওনি পুস্তকটিতে যুক্ত করেন। এই গুরুত্বপূর্ণ পুস্তকটি ১৯৭৪ সালে ইংরেজিতেও অনুবাদিত হয়।

এই পুস্তকে বিমানগুলি কিভাবে ভূমি থেকে আকাশে উড়বে তা নিয়ে কোন লেখা নাই:
উত্তর হতে পারে:

১. বইটি অসম্পূর্ণ!
২. পুস্তকটির সম্পূর্ণ জ্ঞান ঔপন্ডিতের ছিল না!
৩. ঔপন্ডিতের পুস্তকটির পূর্ণ জ্ঞান ছিল, কিন্তু তিনি তা প্রকাশ করার আগেই ১৯২৩ সালে তাকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয় পুস্তকটি প্রকাশের এক্টিভিটির কারণে!
৪. পুস্তকটির মিসিং পৃষ্ঠাগুলো বিট্রিশরা নিজের অধীনে নিয়ে নিছিলো!
৫. ১৯২৩ সালে পুস্তকটি সম্পূর্ণ হয়েছিল আর প্রকাশ হয়েছে ১৯৭৩ সালে, এর মধ্যে অন্যকোন কারণে পৃষ্ঠা মিসিং হতে পারে।

এই পুস্তকে লেখা আছে এটা "বৃহৎ বিমান শাস্ত্রের ১ম পর্ব" আর যন্ত্ সর্বস্ব বইয়ের ৪০তম পর্ব।

CSIR EXPRIMENT REPORT:



এই এক্সপিরিমেন্ট করেছিলেন Dr. Maheshwar shaRon, nano scientist,RETD propessor,(IIT BOMBEY),RETD propessor,(EMERITUS), (CSIR AND UGC) এবং Scientist Dr. MADHURI SHARON. এই দুই বিজ্ঞানীর ১৯৮৪-১৯৯০ সাল পর্যন্ত "বৈমাণিক শাস্ত্র" পুস্তকে উল্লেখিত "গুহা গর্ব দর্শন যন্ত্রে নির্দেশনা অনুযায়ী গবেষণা করে প্রমান করে যন্ত্রটি সফলভাবে কাজ করে।


এক প্লেন থেকে মাটির নিচে কামান বা যুদ্ধাস্ত্র সূর্যের আলো সহ কয়েকটি দ্রব ব্যবহার করে প্লেনের পাইলটকে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এলার্ট করে দেয়।

এসম্পর্কে প্রমান :    




সমস্যা ৩: এই পুস্তকের বিমানের ডিজাইন নিয়ে তৎকালীন অনেকে উড়ার জন্য দূর্বল ডিজাইন মনে করেছিল এবং বর্তমান ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় ও আছে, সম্পতি হিস্টোরি টিভি ২০১৭ সালে প্রতিবেদনে ৩ডি মডেল বানিয়ে প্রমানের মাধ্যমে বুঝিয়েছে এই ডিজাইনের বিমানগুলি আকাশে উড়তে সক্ষম। 

এছাড়া ত্রিপুরা বিমানের সফল টেস্টে সবকিছু সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে কালিফনিয়ার বিজ্ঞানী।


হিস্টোরি টিভির প্রমান :


বইটি আপনি কোথায় পাবেন?
গুগলে Vaimānika Shāstra পুস্তকের ইংরেজিসহ বেশ কিছু ভাষায় পিডিএফ সহ অনেক ওয়েবসাইট এ সম্পূর্ণ ফ্রিতে পাবেন পড়ার জন্য।  এছাড়া Amazon এও ২৩-২৫ ডলারএ বইটি আছে।

Post a Comment

উপরের তথ্যটি সম্পর্কিত আপনার কোন জিজ্ঞাসা আছে? বা এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এমন কোন বিষয় জানার আছে? থাকলে অবশ্যই সুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করে জানান, আমরা নিশ্চয়ই আপনাকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করব এবং এতে উভয়ের জ্ঞানের প্রসার ঘটবে।

Previous Post Next Post