যেকোন ধরণের ধর্মীয় প্রশ্নের উত্তর জানতে বামে মেজেজ্ঞার আইকনে ক্লিক করে আমাদের প্রশ্নটি লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে জানান, SanatanLive.blogspot.com

হিন্দুরা নিরামিষ কেন খায়?

 অনেক হিন্দু আছে যারা মাছ মাংশ খায়না। শুধুমাত্র নিরামিষ খায়। তাদেরকে আবার অনেক সময় অনেকে কটুক্তি করে বলে যে, গাছ‌ও কি ব‍্যাথা পায় না?

প্রত্যেক নিরামিষভোজীদেরই জীবনে একবার না একবার টিটকারি মূলক কথা শুনতে হয়। অতি সাধারন হলো, "মাছও খাও না?" "সবজি থেকে প্রোটিন পাও কিভাবে?!'' "হ‍্যা খারাপ লাগে ওদের কথা ভাবলে কিন্তু মাংস ছাড়া তো ভাবাই যায় না" " আমাদের খাওয়ার জন্যই তো ওদের জন্ম"। সব চেয়ে হতাশাজনক যুক্তি হচ্ছে "গাছদের ও তো প্রান আছে,ওরা ও ব্যাথা পায়, গাছদের প্রতি তুমি এতো রেসিস্ট কেন? ওদের খাও কিভাবে এত দরদ থাকলে!


আসুন আমরা এই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করি, গাছদের ও জীবন আছে, তারা বংশবৃদ্ধি করে ও বেড়ে উঠে, এক সময় অন্য প্রানীদের মত তারাও মারা যায়, কিন্তু তাদের এই জীবন যাত্রা কি আমাদের মত? এক কোষী এ‍্যামিবার‌ও জীবন আছে। তাদের‌ও বংশ বিস্তার হয়। তাই বলে তাদের সাথে কি আমরা আমাদের পোষা বিড়াল বা কুকুরটার তুলনা দিতে পারি! ব‍্যাথা অনুভব করা আর বেঁচে থাকার মধ্যে বিরাট পার্থক্য আছে। বিশেষ করে গাছদের অনুভূতি নিয়ে গবেষণা হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। আমরা নতুন করে কি জানতে পেরেছি এসব গবেষণায়?


★ জীববিজ্ঞানী এবং ইসরাইলের লাইফ সায়েন্সের ডিন ড্যানিয়েল চোমোভিটস তার বই "ওয়াট এ্যা প্ল্যান্ট নোস" এ প্রকাশ করেন গাছদের জীবন আমাদের মত নয়। গাছরা অনুভব করতে পারে না। যখন একটা পাতা কাটা হয় আমরা মনে করি গাছটা ব্যাথা পাচ্ছে কিন্তু সেটা আমাদের নিজেদের ধারনা মাত্র।

কিন্তু তার মানে এই না পাতা কেটে ফেলার কারনে তাদের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। স্টাডি করে পাওয়া গেছে অনেক গাছরাই বৈদ্যুতিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে স্পর্শ করলে পাতা বন্ধ করে দেয়, এটা তারা ব্যাথার জন্য করে না পোকামাকড় থেকে নিজ প্রজাতি রক্ষার জন্য করে।


চোমোভিটস বলেন, "গাছের কোন ব্যাথা অনুভব করার স্নায়ু নেই কিন্তু চাপ অনুভব করে তারা স্পর্শ ও স্থান বদল বুঝতে পারে"।

তাহলে যে গাছের সাথে কথা বললে, ওদের স্পর্শ করলে ফল ফুল বেশি হয়। হ‍্যা এমন একটা ধারণা আমাদের আছে। সেটার কারন স্টিমুলী দেয়া যার মানে হল গাছের বৈদ্যুতিক প্রতিক্রিয়াকে চাঙ্গা করে তোলা যায়, যার সাথে অনুভূতির কোনো সম্পর্ক নেই। গাছে সার দিলেও এক‌ই স্টিমুলী হয়।


★ সমসাময়িক আরেকটা স্টাডি দেখায় যে ব্রকলির কাছের একটা প্রজাতি গাছ পোকার আক্রমনের সময় অতিরিক্ত তেল নিঃসরন করে যা পোকার জন্য ক্ষতিকর। এভাবে সব প্রানীদের মত সে নিজ প্রজাতি রক্ষার্থে নিজেকে সম্পূর্ণ খাবার হবার হাত থেকে রক্ষা করে, কিন্তু তা শুধু মাত্র স্পর্শ অনুভব করে ব্যাথা নয়।

চোমোভিটস বলেন, "তুমি একটা গাছ মেরে ফেললেও তারা বুঝতে পারবে না"। এটা বলার কারন হিসেবে তিনি বলেন, "কারন গাছ প্রানীদের মত ব্যাথা অনুভব করতে পারে না। প্রানীরা নিজেদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রকাশ করতে পারে, আয়নায় নিজেকে চিনতে পারে, সমস্যার সমাধান করতে পারে,আবেগ প্রকাশ করতে ও পারে।



প্রানীদের মস্তিষ্ক ও ব্যাথা অনুভব করার স্নায়ু আছে। তারা ব্যাথাকে অনুভব করতে পারে, সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে পারে, পালিয়ে বাঁচার উপায় খুঁজতে পারে, তারা বুঝতে পারে কে তাদের ব্যাথা থেকে মুক্তি দেয়ার ক্ষমতা রাখে আর কে তাদের ব্যাথার কারন। এমনকি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেও জানে। তারা কাঁদে। তাদের পরিবারের পরিষ্কার ধারণা আছে। ভালোবাসা আর ঘৃণার ক্ষমতা আছে। তারা বিনোদন উপভোগ করে। কিন্তু গাছপালার স্নায়ু ভিন্ন ভাবে গঠিত, তাদের মস্তিষ্ক নেই যেখানে ব্যাথা, ভালোবাসা বা ঘৃনা অনুভব করার স্নায়ু ধারন করে না।



তিনি আরো বলেন, "তাই নিরামিষভোজীরা আমরা সবাই আমাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে গর্ববোধ করতেই পারি যে আমার খাবার তৈরিতে কোন প্রান ব্যাথায় কাতর হয়না।


আমরা শুধু বলতে পারি খাদ্যাভ্যাস আপনার ব‍্যাক্তিগত ব‍্যাপার। আপনি যেভাবে গরু ছাগল হাঁস মুরগি খান সেভাবেই একজন কোরিয়ান আপনার পছন্দের পোষা কুকুর বা বিড়ালটিকে পেলেও খেয়ে নেবে। কিন্তু এটুকু জেনে খান যে ওরাও বাঁচতে চায়। ওরাও ওদের পরিবারকে ভালবাসে, ওদের চোখের সামনেই যখন ওর সমগোত্রের কাউকে জবাই দেয়া হয় সেও আতংকিত হয়ে ওঠে, কষ্ট পায়। ওরা কেউ মরতে চায় না ঠিক যেমন আমরা আমাদের জীবন দিতে চাইবো না অন্য কারো খাবার হ‌ওয়ার জন্য। পার্থক্য একটাই ওরা কথা বলতে পারেনা। তাই আমরা ওদের সব অনুভূতি নজর আন্দাজ করে দিতে পারি।



তেলাপোকা ও পাখি আর উটপাখি ও পাখি।

গরু ও জীব, দূর্বাঘাস ও জীব।

উপরের লাইন দুটির ভাবার্থ বোঝার চেস্টা করুন,আশাকরি আপনার মনের লোকানো প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।


[[ এই তথ্যটিতে বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দেওয়া হয়েছে, পরবর্তীতে তথ্যটি সমৃদ্ধ করতে শাস্ত্রীয় ব্যাখাও যোগ করা হবে, অপেক্ষা করুন]]

তথ্যসূত্র:


1. লিংক ১

Post a Comment

উপরের তথ্যটি সম্পর্কিত আপনার কোন জিজ্ঞাসা আছে? বা এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এমন কোন বিষয় জানার আছে? থাকলে অবশ্যই সুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করে জানান, আমরা নিশ্চয়ই আপনাকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করব এবং এতে উভয়ের জ্ঞানের প্রসার ঘটবে।

Previous Post Next Post