যেকোন ধরণের ধর্মীয় প্রশ্নের উত্তর জানতে বামে মেজেজ্ঞার আইকনে ক্লিক করে আমাদের প্রশ্নটি লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে জানান, SanatanLive.blogspot.com

কেউ কি মারা যায়? দেহ ছেড়ে যাওয়ার পর আত্মার কী হয়?

না। কারো জন্ম নেই আর মৃত্যু নেই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতার মধ্যে জানিয়েছেন আত্মা দেহকে আশ্রয় করে থাকে সেই দেহের বিনাশ আছে কিন্তু আত্মার বিনাশ নেই।



ভগবান বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ গীতায় অর্জুনকে আত্মার নিত্যতা জানিয়েছেন-----------


অন্তবন্ত ইমে দেহা নিত্যস্যোক্তাঃ শরীরিণঃ৷

অনাশিনোপ্রমেয়স্য তস্মাদ্যুধ্যস্ব ভারত৷৷

শ্রীশ্রী গীতা,০২/১৮


অর্থ: আত্মা যে দেহকে আশ্রয় করে অবস্থান করেন, সেই দেহ নশ্বর বলে কথিত হয়েছে। কিন্তু আত্মা নিত্য, বিনাশ রহিত ও প্রমাণের অতীত। অতএব হে অর্জুন যুদ্ধ করো।


দেহটা যদি বিনাশশীল হয় তাহলে তো তার ধ্বংশ অনিবার্য। তাহলে আমি ধ্বংশ হয়ে গেলে কর্ম্ম ফলের ভোগটা কার? এই প্রশ্নের উত্তরটা কিন্তু লক্ষ্য করলে ভগবানের এই শ্লোকে প্রতিয়মান হয় স্পষ্টভাবে। দেহটা বিনাশশীল তাই দেহটা আমি নই। যেহেতু আত্মা অবিনশ্বর ও নিত্য তাই আত্মাটাই হলাম আমি। দেহের বিনাশ আছে কিন্তু আত্মার বিনাশ নেই, তাই আমার জন্ম নেই আর মৃত্যু নেই।


জীব আমি দেহ নয়, আমি দেহী অর্থাৎ আত্মা। জীবাত্মা আমি চেতন কিন্তু দেহ অচেতন বা জড়। দেহ সৃষ্টবস্তু কিন্তু আত্মা বা আমি নিত্যবস্তু। দেহের জন্ম-মৃত্যু আছে, কিন্ত জীবাত্মা আমি অজ বস্তু বলে আমার জন্ম-মৃত্যু নাই। দেহ ধ্বংস হলেও আত্মা জীবের ধ্বংস হয় না।


আত্মার জন্ম-মৃত্যু নাই। কারণ জীবাত্মা অজ ও নিত্যবস্তু। দেহ ধ্বংস হলেও আত্মার নাশ হয় না।


দেহ ও দেহী এক নয়। যেমন গৃহ ও গৃহী এক নয়, তদ্রুপ দেহ ও দেহী এক হতে পারে না।


নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ।

ন চৈনং ক্লেদয়ন্ত্যাপো ন শোষয়তি মারুতঃ ॥

শ্রীশ্রী গীতা,০২/২৩


অর্থ: হে অর্জুন, এই আত্মাকে অস্ত্রের দ্বারা কাটা যায় না, আগুনে পুড়ানো যায় না, জলে ভেজানো যায় না, এবং হাওয়াতে শুকানো যায় না।


বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায়

নবানি গৃহ্ণাতি নরোহপরাণি ।

তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণা-

ন্যন‍্যানি সংযাতি নবানি দেহী ॥

শ্রীশ্রী গীতা,০২/২২


'মানুষ যেমন পুরাতন বস্ত্রকে ত্যাগ করে অন্য নতুন বস্ত্র গ্রহণ করে, সেইরকম দেহধারী জীবও পুরাতন শরীরকে ত্যাগ করে অন্য নতুন শরীর প্রাপ্ত হয়।' 


এই নতুন দেহ ধারণ করাটাই সাধারণ মানুষের বিচারে জন্ম আর দেহ ছেড়ে যাওয়াটাই মৃত্যু।'


যারা গুরু দীক্ষা নিয়ে ভগবানের ভজনা করে তারা ভগবানের ধামে চলে যান। যারা ভগবানের ভজনা করে না তাদের আবার কর্ম বিপাকের ফলে বারবার পশু-পক্ষী কীট-পতঙ্গ হয়ে দেহ ধারণ করতে হয়। নরতনুই ভগবদ্-ভজনের মূল। মনুষ‍্যেতর দেহে হরিভজন হয় না। বড় দূর্লভ এই মানব জীবন,অনেক রাস্তা পার করে এখানে আসতে হয়ছে, আবার চুরাশি লক্ষ যোনি ভ্রমণ করার পর মানব দেহ লাভ হবে।


।।শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌরভক্তবৃন্দ।।                                                                                            হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। 

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

Post a Comment

উপরের তথ্যটি সম্পর্কিত আপনার কোন জিজ্ঞাসা আছে? বা এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এমন কোন বিষয় জানার আছে? থাকলে অবশ্যই সুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করে জানান, আমরা নিশ্চয়ই আপনাকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করব এবং এতে উভয়ের জ্ঞানের প্রসার ঘটবে।

Previous Post Next Post